গর্ভকালিন সময় কি কি খাবেন না

 



সন্তানের বুদ্ধি ও বিকাশ ঘটে থাকে গর্ভ অবস্থায় ২৫শতাংশ। গর্ভাবস্থায় কি খাবেন সেটি সঠিকভাবে না জানার কারণে সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ পরিপূর্ণভাবে হয় না। বাবা-মা সব সময় চায় তাদের সন্তান যাতে মেধাবী হয়। কিছু ট্রিক্স ফলো করলে সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ সুগঠিত হবে। পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা গ্রহণ করা সকলের উচিত।

কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে সতর্কতা একটু বেশি হওয়া উচিত। আর্টিকেলে থাকছে কি খেলে মানসিক বিকাশ ও মেধাবী হবে, এই সময়ে কি কি খাওয়া উচিত হবে না, এবং কি খেলে গর্ভপাত হতে মুক্তি পাওয়া যাবে। এ সকল তথ্য জানতে শেষ পর্যন্ত দেখতে থাকুন।

গর্ভকালিন সময় কি কি খাবেন না

সবার প্রথমে আপনাকে জানতে হবে গর্ভকালীন সময়ে কি কি খাওয়া যাবেনা। সঠিক তথ্য না জানার কারণে গর্ভপাতের মত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১।অপাস্তুরিত দুধ
অপাস্তুরিত দুধ বলতে বোঝায় কাঁচা দুধ যা পাস্তুরিত করা হয়নি। পাস্তুরিকরণ একটি প্রক্রিয়া প্রায় নির্দিষ্ট সময় ধরে দুধকে উষ্ণ করা হয়। কাঁচা দুধে ব্যাকটেরিয়া সহ প্যাথোজেন থাকে যা একজন গর্ভবতীর জন্য বিপদজনক। খুব পাস্তুরাইজেশন এর মাধ্যমে এর মধ্যকার প্যাথোজেন ও ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। তাই কাঁচা দুধ বা পাস্তুরায়ন ছাড়া দুধ বা এই ধরনের দুধের তৈরি খাবার যেমন পনির অবশ্যই খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২। অশিদ্ধ ডিম বা মাছ মাংস
অনেকেই ডিম হাফ বয়েল আধা সিদ্ধ করে খেতে ভালোবাসেন। একটু গর্ভবতী অবস্থায় আপনি কখনোই এই হাফ বয়েল ডিম খাবেন না কেননা এতে থাকে সালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়া যা শরীরের বমি পায়খানা জ্বর এবং পেট ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে যা গর্ভবতী অবস্থায় ভ্রুনের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়। এমনকি মাংস অর্ধ সিদ্ধ করে খাওয়া দেহের জন্য ভয়ংকর। অর্ধ সিদ্ধ মাংস থাকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট উদাহরণ হিসাবে ইসচেরিয়া কলি, লিস্টেরিয়া, সালমোনিল্লা, ইত্যাদিক্ষতিকর প্যারাসাইট যা চোখের সমস্যা মৃগী জটিলতা এবং স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই একজন গর্ভবতীকে সম্পূর্ণ সিদ্ধ করা রান্না বিশেষ করে আধা সিদ্ধ ডিম বা মাছ-মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩। কফি, চা
কফি বা চা হল ক্যাফিন জাতীয় খাবার। অতিরিক্ত চাও কফি পানের ফলে শিশুর বৃদ্ধি আজকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সারাদিনে এক থেকে দুই কাপ কফি খেতে পারেন তবে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি চা বা কফি খেলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে এর বেশি একদমই খাওয়া উচিত নয়।

৪। মদ্দ্যপান করা
সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই মধ্যপান সবসময় খারাপ। এতে যদি প্রশ্ন আসে গর্ভবতীর কথা তবে এটি তার এবং তার বাচ্চার উভয়ের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। পান স্টীলবার্থ এর আশঙ্কা বাড়াই।অ্যালকোহলিক সিনড্রোম ব্রণের মধ্যে দেখা যেতে পারে এবং ড্রোনের বিকাশ ব্যাহত হতে পারে শিশুর হার্টের সমস্যা এবং বুদ্ধি কম হতে পারে। তাই প্রেগনেন্সির সময় এইরকম অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়।

৫। কলিজা
কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। যা একজন সাধারন মানুষের জন্য খুবই উপকারী হলেও একজন গর্ভবতীর জন্য সেটি খুবই বিপদজনক। বিশেষ করে প্রেগনেন্সির শুরুর দিকে আপনার বাচ্চার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তৈরি হয় এই সময় আপনার অতিরিক্ত ভিটামিন এ খাওয়া গর্ভের বাচ্চার জন্য ভুল সিদ্ধান্ত। তাই কতটুকু ভিটামিন গ্রহণ করা উপযুক্ত সেটি একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে তবেই কলিজা খাবেন ।

গর্ভকালিন সময় কি কি খাবেন

আপনাকে সন্তানের বৃদ্ধি সঠিকভাবে রাখতে অবশ্যই একটি খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। আপনার খাদ্য তালিকায় ছয় ধরনের খাবার অবশ্যই রাখতে হবে। সুষম খাদ্যের তালিকায় শর্করা, আমিষ,শ্নেহ, খনিজ লবণ,ভিটামিন ও পানি থাকে।তেমনি একজন গর্ভবতীর খাদ্য তালিকায় থাকবে

শর্করা জাতীয় খাবার

রঙিন ফল ও রঙিন শাকসবজি

মাছ মাংস ডাল সীমের বিচি

দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার

ডিম

পানি

ভিটামিন ও খনিজ লবণ উপাদান

শর্করা জাতীয় খাবার

আমরা ভাতে বাঙালি। এবং প্রধান খাদ্য উপাদান হলো ধান থেকে তৈরি চাল। আমাদের প্রধান শক্তির উৎস হল শর্করা অথবা শর্করা জাতীয় খাদ্য। শর্করার হিসাবে ভাত এবং শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসাবে রুটি্‌,আলু, নুডুলস, ভুট্টা,পাস্তা,গম,চাল থেকে তৈরি বিভিন্ন খাদ্য ইত্যাদি। চাল থেকে তৈরি হতে পারে যেমন সাদা চাল আঠা লাল চাল লাল আটা। শস্যদানার আর শরীরের পক্ষে গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।

রঙিন ফল ও রঙিন শাকসবজি

ফল ও শাকসবজি আজ জাতীয় খাবার হওয়ার কারণে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিরোধ করে। গর্ভ অবস্থায় প্রতিদিন রঙিন ফল খাওয়া উচিত অন্তত ৫ ধরনের। এবং মৌসুমী ফল গ্রহণ করতে হবে এতে ভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মৌসুম ভিত্তিক ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাওয়া যায়।রঙিন ফলমূল এবং রঙিন সবজিতে ক্যারোটিন থাকে যেটা শিশুর সুস্থ বেড়ে উঠায় সাহায্য করে। কাচা এবং রান্না দুই ধরনেরই শাকসবজি বা ফল খেতে পারেন কিন্তু তা খাওয়ার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

শাকসবজিঃটমেটো, মিষ্টি কুমড়া,মটরশুটি,গাজর, মিষ্টি,আলু,পালংশাক,ক্যাপসিকাম,লাউ।

ফলঃআম,কমলা,কলা বাঙ্গি,পেয়ারা,লিচু,মাল্টা,জাম্বুরা।

প্রোটিন জাতীয় খাবার

আমরা জানি দেহে বৃদ্ধি ও শারীরিক গঠন বিকাশের জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হয়। এবং একজন গর্ভবতী অবস্থায় প্রোটিন জাতীয় খাবার কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অনেকেই জানেনা এবং মাছ-মাংস এড়িয়ে চলে। এ সময় প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। মাছ,মাংস ছাড়া অন্যান্য উদ্ভিদ জাতীয় খাদ্য থেকে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়। নিচে প্রোটিন জাতীয় খাবার দেওয়া হল মাছ,মাংস,দুধ,ডিম,সিমের বিচি,মটর,ডাল ও বাদাম।

মাছঃইলিশমাছ,পুটি,চাপিলামাছ, মহাশোল মাছ,বাটামাছ,কাজলি মাছ

পানি

একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার অথবা সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। সর্বকালীন সময়ে সময় মত পানি পান করা আবশ্যিক। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই একজন গর্ভবতী পানি পান করা উচিত।

ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ লবণ

গতকালীন সময়ে যেকোনো এক ধরনের খাবার খেয়ে সম্পূর্ণ খাদ্য তালিকা পূর্ণ করা উচিত নয়। খাবারে ভিন্নতা রেখে সুষম পরিকল্পনায় খাদ্য তালিকা তৈরি করা দরকার। সুষম খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ও খনিজ লবনের জুড়ি অনেক। ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে প্রাকৃতিক উপায়ে ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান গুলো হল

লেখকের মন্তব্য

গর্ভকালীন সময়ে অত্যন্ত সতর্কতার সময়।এ সময় খাদ্য তালিকায় সঠিক থাকা দরকার।গর্ভকালিন কি কি খাবেন, কি কি খাবেন না এবং কি খেলে সন্তান বুদ্ধিমান হবে তা উপরের আর্টিকেল থেকে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আশা করি।ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন এবং আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটির সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url