সকালে কি খেলে ওজন কমে
দ্রুত ওজন কমানো নিয়ে চলছে যাদের ঘাটাঘাটি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিন কি করে ওজন কমানো সম্ভব।দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি এবংওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না তা জানতে আপনাকে মনযোগ সহকারে আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে ।
সকল সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য।সকলেই চাই নিজেকে ফিট এবং স্লিম রাখতে। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে।শরীরে ওজন বাড়তে থাকায় অনেকে অনেক টাকা খরচ করে নিজের স্বাস্থ্যকে সঠিক রাখতে বিভিন্ন অস্ত্রপাচার করে থাকেন।যার দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল খুব একটা ভালো চোখে দেখা যায় না। স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন প্রত্যেকেরই হওয়া উচিত।
দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি
দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে বেশ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে যা নিচে দেওয়া হল
১। প্রথমেই আপনাকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে
২। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ঘরে বা বাইরে
৩। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে
৪। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।
৫। সুষমখাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে হবে।
খাদ্যাভাস পরিবর্তন করা
প্রশ্ন যখন ওজন কমানোর তখন খাদ্যাভাস পরিবর্তন আবশ্যিক। আপনি হঠাৎ করে আপনার শরীরে ওজন লক্ষ্য করবেন না যদি না খাদ্যে বেশি চাপ পড়ে। অবশ্যই আপনার খাদ্যাভাস এর অতিরিক্ত খাবার থাকার কারণে শরীরে বাড়তি ওজনের দেখা গিয়েছে। তাই আপনাকে এমন খাদ্যাভাসার সাথে অভ্যস্ত হতে হবে।ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না এই বিষয় ফোকাসে রেখে খাবার তালিকা করা উচিত।
ভারী নাস্তা দুপুরের লাঞ্চ এবং রাতে হালকা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমানো যেতে পারে। পরিমাণে পানি পান করতে হবে এতে নিজের পেট ভরপুর মনে হয় এবং হজমেও সাহায্য করে এতে কোন ক্যালরি থাকে না। মাছের তেলের ওমেগা থ্রি ফাটি এসিড থাকার কারণে অতিরিক্ত জমতে দেয় না তাই সামুদ্রিক মাছ ও বেশ ভালো। ডিমের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড থাকে। এর বিভিন্ন আইটেম এর বদলে সিদ্ধ ডিম ডায়েটে রাখাই ভালো।
সকালে কি খেলে ওজন কমে
সকালে খালি পেটে মেটাবলিজম বেশি থাকার কারণে সকালে নাস্তা গুরুত্বের সাথে মাথায় রাখা উচিত।
বিশেষ করে খালি পেটে কিছু পানীয় জল খেতে পারেন যা হজম শক্তি বাড়ায় অ্যাসিডিটি সমস্যা কমায় এবং মেটাবলিজম বাড়ায়।
১।গরম পানির সাথে লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মেশিয়ে পান করতে পারেন।
২।এক চা চামচ জিরা ফুটন্ত পানিতে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে সেটিকে ছেঁকে ঠান্ডা করে খালি পেটে খান। এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
৩। হলুদ পানিতে মিশিয়ে খেলে এটি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে পেট পরিষ্কার রাখে যার ফলে ওজনও বাড়তে পারে না।
৪। অনেকের চা দিয়ে শুরু করে দিন কিন্তু চায়ের সাথে চিনি মেশানো বন্ধ না করলে ওজন কমানোর সম্ভব নয়। বাজারে অনেক ধরনের স্লিমিংটি গ্রিন টি পাওয়া যায় তা দিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার দিন।
৫। আমরা অনেকেই জানি না মৌরি কি জিনিস কিন্তু মৌরির পানি খুবই উপকারী এটি ক্ষুদামন্দা করে ।খাবার আগ্রহ কমিয়ে দিলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা অতি সহজ হয়।
৬।কিছু ড্রাই ফুড খাওয়ার চেষ্টা করবেন তবে ভেজানো ড্রাই ফুড এর বেশি পুষ্টিগণ থাকে ।খালি পেটে সকালে ভেজানো কাঠবাদাম কিসমিস খেলে হৃদরোগ ডায়াবেটিসের মত বড় বড় থেকে সমস্যা বাঁচা যায়।
৭।সকালে পেঁপে খেতে পারেন এতে অনেক ক্যালোরি কম থাকে এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সাথে সাথে ওজনও কমাতে সাহায্য করে।
রাতে কি খেলে ওজন কমে
রাতের জন্য কখনো ভারী খাবার রাখা উচিত নয় সব সময় হালকা খাবার ডায়েট চাটে রাখা উচিত না হলে হজম কঠিন হতে পারে ঘুমানোর সময়।ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না এসব দিক না ভেবেই খাবার খেলেও রাতে আবার খাবার চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এখন প্রশ্ন আসে রাতে কাজ করতে করতে বা পড়াশোনা করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেলে ডিনার করার পরো নতুন করে ক্ষুধা পায়। তখন কি খাব?তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর হল
১।বাদাম খেতে পারেন।
বাদামের মধ্যে আমন্ড বাদাম এ ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে এই বাদামে একসঙ্গে প্রোটিন ও ফাইবার পাওয়া যায়। এই ফাইবারের কারণে খাদ্য অনেকক্ষণ পেটে থাকে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাই রাত জেগে জেগে কিছু বাদাম খেয়ে নিলে মনের ক্ষুধার সাথে সাথে পেটের ক্ষুধাও কমানো যায়।
২।কলা
কলা হলো এমন একটি ফল যা দামে অনেক সস্তা হলেও মানে অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। কলা খেয়ে কেউ মোটা হতে পারে না কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।এতে পেট ভরা থাকে সেই সাথে গভীর রাতে জাংকফুড বা চিপস খেয়ে নেওয়ায় থেকে বিরত রাখে।
৩।দই
রাতে ক্ষুধা লাগলে এক বাটি দই খেতে পারেন দই পেশি গঠনের সহায়তা করে তবে মিষ্টি দই খাওয়ার যাবেনা টক দই খেলে ভালো সুফল মিলবে।এতে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট এর কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না
ওজন কমানো মোটেও সহজ কাজ নয় এটির জন্য অনেক খাবার বাদ দিতে হয় তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ওজন কমানোর জন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত এর জন্য বেশ কিছু খাবার যেমন সাদা ভাত সাদা পাউরুটি এবং চিনি আবশ্যিকভাবে পরিহার করা দরকার।যারা বলেন ওজন কমানোর জন্য শাকসবজি খায় তবুও ওজন কমে না ।
এর কারণ হলো বেশ কিছু সবজি আছে যেগুলো ওজন কমানোর বদলে ওজন বাড়ায় যেমন ভুট্টা কচু ওল আলু আলু থেকে তৈরি চিপস ফুলকপি বাঁধাকপি গাজর বিট। আর আপনাকে একটি তালিকা তৈরি করতে হবে যে ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না । নিষেধাজ্ঞার সেই খাবার তালিকা গুলো হল
১। সাদা চিনি
২। সাদা পাউরুটি
৩। সাদা ভাত
৪। আলু,আলুর তৈরির চিপস
৫।কচু
৬।ওল
৭।বাঁধাকপি
৮।ফুলকপি
৯।বিট
১০।গাজর
১১।মিস্টান্ন
১২।প্যাকেট জাত খাবার
১৩। কোমল পানিও ইত্যাদী
কোন কোন ফল খেলে ওজন কমে
ওজন কমাতে সরাসরি সাহায্য করে যে পাঁচ ধরনের ফল তা হল
সফেদাঃসফেদা খেলে অতিরিক্ত চর্বি কমে, মেদ কমাতে সাহায্য করে এই ফল ত্বক এবং হাড়ের জন্য খুবই উপকারী প্রতিদিন সফেদা খেলে ওজন কমাতে বেশ ভূমিকা রাখবে তাই সফেদা ডায়েটে রাখা উত্তম।
আঙ্গুর ফলঃ আঙ্গুর ফল টক এই ফলে আলাগিক এসিড থাকে।শরীরের বিদ্যমান ফ্যাট গুলোকে কমায়।তাই আঙ্গুর একটি উপকারী ফল ওজন কমানোর জন্য।
কমলা লেবু বা লেবুঃ লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। ভিটামিন সি ফ্যাট গলায়।লেবু অবশ্য অবশ্যই রাখা উচিত একজন ওজন কমানো ব্যক্তির ডায়েট চাটে।
পেয়ারাঃ পেয়ারাতে প্রচুর ফাইবার থাকে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং পেট অনেকক্ষণ ভরে রাখে।
কোন কোন সবজি খেলে ওজন কমে
অনেকেই রয়েছেন যারা প্রচুর সবজি খান কিন্তু তারপরেও বলেন তাদের ওজন কমে না এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না । সকল সবজি ওজন কমায় না কিছু কিছু সবজি আছে যেগুলো ওজন বাড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবজি নির্বাচন করতে হবে এবং একটি তালিকা করতে হবে কোন সবজি খেলে ওজন কমে না এবং কোন সবজিতে ওজন কমায়।
সবজীঃ পালংশাক, ব্রুকলি, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম, টমেটো
ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায়
অনেকের ঘরে বসে ওজন কমানোর কথা চিন্তা করেন যাদের মধ্যে মেয়েরা প্রধান তারা বাইরে জিমে গিয়ে ওজন কমানোর পক্ষপাতিত্ব করেন না। পানি পান করা পর্যাপ্ত পরিমাণে ।খাবার খেতে গিয়ে অনেক সময় খাবার খাওয়ার মাঝে পানি খেলে পেট ভরপুর মনে হয় এবং খাওয়াটা কম হয় এভাবে ওজন কমানো যেতে পারে।
অনেকে আবার কফির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্ল্যাক কফি খাওয়ার কারণে ওজন কমানো যেতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম একটি বিশাল বড় অংশ ওজন কমানোর জন্য ঘরে বসে বিভিন্ন ব্যায়াম থাকে মেদ কমানোর সে সকল ব্যায়াম সকালে ঘুম থেকে উঠে চর্চা করলে ক্যালোরি বার্ন করানো সম্ভব।লেবুতে ভিটামিন সি থাকে।
এটি চর্বি গলাতে সাহায্য করে তাই ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে লেবু পানি খাওয়া খুবই উপকারী একটি পন্থা।ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলো লক্ষ্য রাখা। শর্করাযুক্তখাবার পরিহার করা ব্যায়াম করা,ফল ও শাকসবজি বেঁছে খাওয়া,ব্ল্যাককফি খাওয়া, ঘুম থেকে উঠলে কিছু ঘরে তৈরি পানিয় খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এবং চিন্তামুক্ত থাকার মাধ্যমে ঘরে বসে ওজন কমানো সম্ভব।
ঘুমিয়ে ওজন কমানোর উপায়
আপনি ঠিকই টাইটেল পড়ছেন সত্যি ঘুমিয়ে ওজন কমানো সম্ভব তবে এর পরিমাণ সঠিক না হলে বরং উল্টো হতে পারে। একজন মানুষের দৈনিক ছয় ঘন্টা ঘুমানো উচিত সেখানে আপনাকে দুপুরেও ছোট্ট একটা ঘুম দিয়ে নেওয়া দরকার তবে সেটি ২০ মিনিট থেকে 30 মিনিটের বেশি হবে না। এতে স্বাস্থ্যকর ভাবেই ওজন কমবে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কিছু কিছু সেলিব্রেটিরা এই উপায়ে বিশ্বস্ত এবং তারা নিজেরাও ঘুমিয়ে ওজন কমানোর টিপস উল্লেখ করেছেন। অনেকে রয়েছেন যারা খাওয়া দাওয়ার পরেই বিছানে ঘুমোতে চলে যান অথবা ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এক্ষেত্রে তাদের উচিত ঘুমানোর অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নেওয়া যাতে সেটি হজম হওয়ার সময় পায়।এবং ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলো বাদে রাতের খাবার মাথায় রাখা।
আপনি যদি ওজন কমানোর শারীরিক ব্যায়াম করে থাকেন তবে তা সন্ধ্যার পর করতে পারেন কারণ সেটির অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীরের বিপাক করতে থাকে বলে আপনি ঘুমোতে যাওয়ার পরেও শরীরের ক্যালোরি খরচ হবে শারীরিক পরিশ্রম বা শরীর চর্চা করার পর যদি ঠান্ডা বরফ পানিতে ৩০ সেকেন্ড গোসল করা যায় তাহলে শরীরের ব্রাউন ফ্যাট গুলো সক্রিয় হয়ে ক্যালোরি ঝরাতে থাকে ঘুমের মধ্যেও। আগেই বলা হয়েছে গ্রিন টি ওজন কমানোর জন্য কতটা উপকারী। রাতে একটা গ্রিন টি ডায়েট চার্টে রাখলে সেটি ঘুমের মধ্যেও ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করে। এভাবেই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওজন কমানো সম্ভব।
কি ঔষধ খেলে ওজন কমে
কি ওষুধ খেলে ওজন কমে এটি অবশ্যই আপনার পার্শ্ববর্তী চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে তবে মোটা হয়ে যাওয়ায় বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত অবস্থায় স্থূলতাচিকিৎসায় জিরো ফ্যাট 120 mg ক্যাপসুল ব্যবহার করা হয়।এটি বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে তাই আবারও বলা হলো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ গ্রহণ করবেন।
লেখকের মন্তব্য
ওজন কমানো সহজ কাজ নয়। ধীরে ধীরে ওজন কমানোটাই শ্রেয় ।আশা করি উপরের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন এবং দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি,ওজন কমানোর খাবার,ওজন কমানোর জন্য কি কি খাওয়া যাবে না ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং আরও নতুন নতুন তথ্য জানতে ওয়েবসাইটির সাথেই থাকুন।ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url